Skip to main content

আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, প্রশ্ন আমরা করবই:

আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারপ্রশ্ন আমরা করবই: 


মহুয়া ম্যাডাম
বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে প্রবাসী বাঙ্গালীদের প্রতি আপনার যে মনোভাব আনন্দবাজার পত্রিকায় ব্যক্ত করেছেন তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আপনার দলের সাথে সহমত পোষণকারী
প্রবাসী বাঙ্গালীদের বিভিন্ন দপ্তরে বসিয়ে দলীয় ব্যর্থতা ঢাকতে ব্যস্ত থাকেন কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করলেই প্রবাসীদেরকেপরবাসীবলে জনগণের সামনে তুলে ধরেন, কেমন গণতন্ত্র?
আপনার লেখায় আপনি গোটা বিশ্বের অনেক পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেনআপনাকে শুধু পশ্চিমবঙ্গের কিছু পরিসংখ্যান মনে করিয়ে দিতে চাই। পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা ভারতবর্ষের জনসংখ্যা .৫৪ শতাংশ। ভারতবর্ষে সর্বমোট যা টেস্টিং করা হয়েছে সেই অনুপাতে পশ্চিমবঙ্গে ৪৩,৭২০ জনের টেস্টিং হওয়া উচিত ছিল কিন্তু বাস্তবে মাত্র ৯৮৮০ জনের টেস্টিং করা হয়েছে অর্থাৎ আমাদের রাজ্যে ৪৪২ শতাংশ কম টেস্টিং হয়েছে। আপনি বলতে পারেন পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন রাজ্যে অবস্থিত কেন্দ্রীয় গবেষণাগার গুলিতে টেস্টিং করা কমিয়ে দিয়েছিল? প্রতিদিনের টেস্টিং এর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আপনারা কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন? কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলেছিলেন লকডাউন আংশিকভাবে তুলে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে অথচ কয়েক দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি কিভাবে এতটা ভয়ানক হলো, তাহলে কি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হাতে কোনরকম তথ্যই ছিলনালকডাউনের প্রারম্ভে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন আইসোলেশন সেন্টার গড়ে তুলেছিলেন কিন্তু সেই সমস্ত আইসোলেশন সেন্টারের অসহায় অবস্থা জনসমক্ষে আসার পরেই মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ হল। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন হাসপাতালের একাধিক ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ার এবং রাতের অন্ধকারে মৃতদেহ সৎকার করার খবর সামনে এসেছে। এরপরেও কি আমাদের মুখ্যমন্ত্রী কে প্রশ্ন করার গণতান্ত্রিক অধিকার টুকুও নেই?
আপনার লেখায় যখন আপনি বিদেশে বসবাসকারী গুজরাটি দের সাথে বাঙ্গালীদের তুলনা করলেন তাহলে কিছু বাস্তব সত্য আপনার জানা দরকার I ভেবে দেখেছেন, কোন গুজরাটি বিদেশে যায়, আর কোন বাঙালি বিদেশে যায়গুজরাটিরা কলকাতা, মুম্বাই যায় মূলত ব্যবসা করতে আর আমেরিকা যায় চাকরি  এবং ব্যবসা দুটোই করতে, কিন্তু বাঙালিরা? পশ্চিমবঙ্গেই ব্যাবসার সব রাস্তা বন্ধ, বাকিতে ব্যবসা, পেমেন্ট না দেয়া, দাদাগিরি, সিন্ডিকেট এর দৌলতে যারা নিজভূমে ব্যবসা করতে পারেনা, তারা বিদেশে ব্যবসা করবে কিভাবে? লোক বলে বাঙালি ব্যবসা পারে না l কত লক্ষ বাঙালি ব্যবসা শুরু করে পেমেন্ট না পেয়ে ভিখারী হয়ে গেছে জানেনচেষ্টা করেছেন পরিস্থিতি শুধরোতেএবার আসি চাকরি l কোন চেষ্টা করেছেন রাজ্যের উন্নতিরশিল্প আনা তো দূরের কথা, আমাদের দিদি  ন্যূনতম সিগন্যাল দেননি শিল্পায়নেরক্ষমতায় এসেই SEZ বন্ধ করলেন l তারপর FDI এর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে করে কেন্দ্র সরকার ছাড়লেন l জমি দিচ্ছেন না l সাগরে বন্দর বানাতে দিলেন না নয় বছরে l রাজ্যে কোন চার লেন রাজ্য সড়ক নেই l জাতীয় সড়ক এর জমি দিচ্ছেন না l জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জ সেতু ১০ বছর এক কাঠা জমির জটে আটকে l মেট্রো রেলে সব রাজ্য ৫০% বিনিয়োগ করছে, আপনি রাজি হলেন না l তার উপর জমি দিচ্ছেন না l এয়ারপোর্ট বাড়াতে দিলেন না l অন্ডাল আরেট্রোপলিস ফ্লপ l ফিনান্সিয়াল হাব আপনাদের দেখে পালিয়ে গেল l কলকাতা দিল্লি ফ্রেইট করিডর করতে জমি দিলেন না l তার মানে, না শিল্প না পরিকাঠামো l চারবার বাণিজ্য সম্মেলন করেছেন, অথচ একটা কাকও বসেনি কলকাতায় l লোকজনের শেষ ভরসা ছিল সরকারি চাকরি l সেখানেও শুধু আপনার লোককে পয়সা দিলেই হয় l RICE, MICE ইত্যাদি কোচিং সেন্টার  উঠে যাচ্ছেকারণ যুবক যুবতীরা বুঝে গেছে সরকারি চাকরি পাওয়া অসম্ভবএর পর আশা করেন আপনাদের গুনকীর্তন করবো l প্রথম IIT, IIM. IISWBM, ISI গুজরাট পায়নি, পেয়েছে আমাদের রাজ্য l তিস্তা, ফারাক্কা, ডিভিসি, কংসাবতী মত কেন্দ্রের পয়সায় ওরা সরদার সরোবর ড্যাম বানায় নিবানিয়েছে নিজের পয়সায় l ওদের কেন্দ্র স্বাধীনতার পরই দুর্গাপুর, হলদিয়া, খড়্গপুর, সল্টলেক, কল্যাণীর মত শিল্পনগরী বানিয়ে দেয়নি l স্বাধীনতার পর ওরা সবই পেয়েছে ওদের মুখ্যমন্ত্রীদের সততার জন্য l তাই ওরা ওদের রাজ্যকে ভরসা করে l
আমরা বিদেশে গবেষণা করি l বাড়িতে ফেরার ইচ্ছে l কিন্তু সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন আমাদের দিদি এবং উনার পূর্বে জ্যোতি বাবু l আপনাদের চামচা প্রয়োজন, মেধা নয় l তাই পশ্চিবঙ্গের ডাক্তারদের মাইনে  এইমস এর নার্সদের মাইনের কাছাকাছিl আপনাদের উপর আমাদের কোন ভরসা নেইl আমাদের রাজ্য ব্যর্থতার যে সুমেরু পর্বত বানিয়েছে তার জুড়ি মেলা ভার l গুজরাটে আমাদের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশী l কিন্তু ওরা সত্যি বলছে l অন্যদিকে আপনার দিদি মিথ্যে ঢাকতে লোক খুঁজে বেড়াচ্ছেনl এই হাহাকারএর মধ্যে উনি শুধু ভোট ছাড়া আর কিছুই ভাবছেন না l তাই আমরাও ওনাকে নিয়ে ভাবছি না I
পরিশেষে আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাই প্রবাসী বাঙ্গালীদের অনেকাংশই ভারতীয় নাগরিক। তাই আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, প্রশ্ন আমরা করবই।

Comments

Popular posts from this blog

litany of lies promoting sycophancy over talent:

litany of lies promoting sycophancy over talent: Respected Mahua Madam, The role of opposition in a democracy can be quoted very aptly through the words of Walter Lippmann which goes as the following, “ In a democracy, the opposition is not only tolerated as constitutional, but must be maintained because it is indispensable .” Being a learned member of parliament of the largest democracy in the world, I am sure you are very well aware of it. But your recent comments on the non-residential Bengalis as published in Anandabazar Partika are very unfortunate to say the least. Expats supporting the party are often deployed to defend the shortcomings. Whereas those raising questions against the Bengal government are being projected as uprooted (rather than non-residential) Bengalis. This derisive attitude is very unbecoming of your stature and against the spirit of democracy. In your recent writing, you have put forward a lot of data from across the globe. I would like to remind you...